- দেশ ছেড়ে চলে গেলেন মিজানুর রহমান আজহারী
দেশ
ছেড়ে চলে গেলেন- বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বেশি আলোচিত ইসলামী বক্তা মাওলানা
মিজানুর রহমান আজহারীর তাফসির মাহফিলের সব কর্মসূচি আগামী মার্চ স্থগিত করা
হয়েছে। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকালে মালয়েশিয়ার মাটিতে পা রাখেন
মিজানুর রহমান আজহারী।
এর আগে গতকাল
বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে তিনি এই তথ্য
জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে, এখানেই এ
বছরের তাফসির প্রোগ্রামের ইতি টানতে হচ্ছে। তাই, মার্চ পর্যন্ত আমার বাকি
প্রোগ্রামগুলো স্থগিত করা হলো। রিসার্চের কাজে আবারও মালয়েশিয়া ফিরে
যাচ্ছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুযোগ করে দিলে, আবারও দেখা হবে ও কথা হবে
কুরআনের মাহফিলে, ইনশাআল্লাহ।’
এ
সময় মাহফিলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রোগ্রামগুলো বাস্তবায়নে যারা সার্বিক
সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবার জন্য রইল আন্তরিক ভালোবাসা ও দোয়া। বিশেষ করে
পুলিশ, প্রশাসন এবং স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়
প্রোগ্রামগুলো সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা তাদের উত্তম
প্রতিদান দান করুক।
’তিনি আরও বলেন, ‘এ
বছর বেশীর ভাগ প্রোগ্রামেই পারিবারিক ও সামাজিক ক্রাই’সিস নিয়ে কথা বলেছি,
পাশাপাশি কয়েকটি সূরার তাফসিরও করেছি। আশা করি, আলোচনাগুলো থেকে আপনারা
উপকৃত হবেন। পরিবারের সবাই মিলে আলোচনাগুলো শুনুন এবং কথাগুলো বাস্তব জীবনে
মেনে চলার চেষ্টা করুন। তাহলে দেখবেন, ধীরে ধীরে আমাদের পরিবার ও সমাজ
সুখময় এবং শান্তিময় হয়ে উঠবে, ইনশাআল্লাহ।’
এ
সময় তিনি উল্লেখ করেন, ‘আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে, দেশের আপামর
জনতার যে ভালোবাসা পেয়েছি, জানিনা সিজদায় পড়ে কতটুকু অশ্রু ঝরালে এবং কোন
ভাষায় শোকরগোজার হলে এর যথাযথ শুকরিয়া আদায় হবে। মালিকের দরবারে আলীশানে
লাখো কোটি শুকর এবং সুজুদ। ওয়ালহামদু লিল্লাহি ‘আলান্নি’আম।’
আজহারী
বলেন, ‘আমি একজন নগন্য মানুষ। মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ছাত্র। কুরআনের ছাত্র
হয়েই বেঁচে থাকতে চাই ও নিরলস কাজ করে যেতে চাই। তাই সুপ্রিয় শ্রোতাদের
বলবো, প্লিজ আমাকে নিয়ে অতিরিক্ত মাতামাতি করবেন না।
আমাকে
জ’ড়িয়ে কোনো ব্যাপারে কাউকে গা’লাগা’লি করবেন না, অন্য কোনো মতাদর্শের
আলেমদের হেয় বা ছোটো করে কিছু বলতে যাবেন না। যদিও তাদের কেউ কখনো আমাকে
ছোটো করে কথা বলেন। অনুরূপভাবে, কোথাও আমাকে ডিফেন্ড করে ত’র্ক বা কমেন্ট
করতে চাইলে, ভদ্রতা বজায় রেখে, যৌক্তিকভাবে এবং বিনয়ের সঙ্গে সেটা করুন।
সত্য একদিন উন্মোচিত হবেই হবে, ইনশাআল্লাহ।’
এ
সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমার এ জীবনের ছোট্ট অভিজ্ঞতায় যা দেখলাম, সেটা হলো:
আমরা আমাদের জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়ে দেই অন্যকে হিং’সা করতে
করতে। নিজেরা কাজ না করে অন্যের বি’রু’দ্ধে অ’পপ্রচার চালাতে আমরা
মহাব্যস্ত। আসলে, অ’পপ্রচার করে তেমন কোনো লাভ নেই। অ’পপ্রচারে আমি কখনো
মন: ক্ষু’ন্ন হইনা।
আমার
বিশ্বাস আপনারাও হবেন না। কারণ, অ’পপ্রচারগুলোই আমাদের প্রচারণার দায়িত্ব
পালন করেছে, আলহামদুলিল্লাহ। হক্বের পথে বা’ধা-বি’পত্তি আসবেই। এটাই
স্বাভাবিক। যে পথে কাঁটা নেই সেটা পথ নয়, সেটা কার্পেট। আর কার্পেটে হেঁটে
মজলিশে পৌঁছানো যায়, মনজিলে নয়। মন্তব্য কখনো গন্তব্য ঠেকাতে পারেনা।
তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লাহ।’
আজহারীকে আবারও দাওয়াতের ময়দানে দেখতে চান সাইফুল্লাহ
এসময়ে
আলোচিত বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীকে দাওয়াতের ময়দানে দেখার
আকাঙ্খা ব্যক্ত করেছেন আরেক আলোচিত আলেম মাওলানা আবদুল হাই মুহাম্মদ
সাইফুল্লাহ। মিজানুর রহমান আজহারীর নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে এক
স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘মন্তব্য কখনো গন্তব্য ঠেকাতে পারেনা।
তাওয়াক্কালতু
আলাল্লাহ…’। (হে আল্লাহ তুমি আমার ‘ভাইকে’ নিরাপদে রেখো। দাওয়াতের ময়দানে
আবার ফিরিয়ে দিও)। আজই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী
জানান, পারিপার্শ্বিক কারণে মার্চ পর্যন্ত তার সব মাহফিল স্থগিত করা হয়েছে।
রিসার্চের কাজে মালয়েশিয়ায় চলে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ভক্তদের
কিছু পরামর্শ দিয়ে স্ট্যাটাসের শেষ দিকে তিনি লিখেন, আর কার্পেটে হেটে
মজলিশে পৌঁছানো যায়, মনজিলে নয়। মন্তব্য কখনো গন্তব্য ঠেকাতে পারেনা।
তাওয়াক্কালতু
আলাল্লাহ…। মিজানুর রহমান আজহারী এবং মাওলানা আবদুল হাই মুহাম্মদ
সাইফুল্লাহ সমকালীন বিষয়ে ওয়াজ করে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তবে মাওলানা
আজহারী মাহফিল করতে গিয়ে বেশ কিছু জায়গায় বাধার মুখে পড়েছেন। নাম উল্লেখ না
করে সম্প্রতি ধর্মপ্রতিমন্ত্রীও তার সমালোচনা করেন।
পাঠকের মতামত: